মে মাসে রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির তিনটি মিলনায়তন—জাতীয় নাট্যশালা, স্টুডিও থিয়েটার ও এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল মিলিয়ে মোট ৯৩ দিনের মধ্যে ৫৪ দিন বরাদ্দ রাখা হয়েছে শুধুমাত্র একাডেমির নামে। তবে নাট্যদলগুলোর অভিযোগ, এসব দিনেও মিলনায়তনগুলো ফাঁকা পড়ে থাকে, অথচ তাদের আবেদন সত্ত্বেও হল বরাদ্দ মেলেনি।
হল বরাদ্দ কমিটির এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে বিতর্ক। নাট্যকর্মী জুবায়ের জাহিদ ‘থিয়েটার সংযোগ’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে প্রশ্ন রাখেন, “কী ধরনের শিল্পচর্চা করতে চাচ্ছেন আপনারা, যাতে তিনটি মিলনায়তনের ৫৪ কার্যদিবস নিজেদের জন্য সংরক্ষণ করতে হয়?”
এই প্রসঙ্গে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, “এই ৫৪ দিনে কোনো নাট্যদলের আবেদন ছিল না, কিংবা হলে কোনো অনুষ্ঠানও হয়নি। তাই দিনগুলো একাডেমির নামে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, নাট্যদল বা সংগঠন চাইলে এই সংরক্ষিত দিনগুলোতে আবেদন করতে পারে এবং কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে তারা হল ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
তবে নাট্যদলগুলোর বক্তব্য ভিন্ন। অনেকেই দাবি করেছে, তারা সময়মতো আবেদন করেও হল পায়নি। কেউ কেউ অভিযোগ করেছে, গত মাসে হল বরাদ্দ পেলেও শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়েছে, ফলে তাদের পরিকল্পিত প্রদর্শনী বাতিল করতে হয়েছে।
এই বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তার ব্যাখ্যা, “সকল আবেদন মঞ্জুর হয় না। কমিটি মানের দিকটি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। কেউ কেউ আগের বরাদ্দ পেয়েও অনুষ্ঠান করেনি, আবার শেষ মুহূর্তে বাতিল করেছে—এতে অন্য দলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব কারণেই কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।”
উল্লেখ্য, এর আগে যেসব দিন বরাদ্দ দেওয়া হতো না, সেসব দিনে হল ফাঁকা দেখানো হতো। তবে এবার থেকে সেসব দিন ‘সংরক্ষিত’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে। যদিও নাট্যজগতের অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে একপেশে বলে মনে করছেন।
শিল্পকলার এই সিদ্ধান্ত ও বরাদ্দনীতির স্বচ্ছতা নিয়ে এখন নাট্যাঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খালি মিলনায়তন থাকলেও নাট্যদলগুলো যদি সুযোগ না পায়, তাহলে তা দেশের নাট্যচর্চার অগ্রযাত্রায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।