টালিউড অভিনেত্রী পূজা ব্যানার্জিকে ঘিরে ফের শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। কিছুদিন আগেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার এক ঘনিষ্ঠ প্রযোজক বন্ধুর কাছ থেকে অর্থ নিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। সেই সময় তার আবেগঘন বক্তব্যে সহানুভূতির ঝড় উঠেছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তবে এবার পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নিয়েছে।
অভিযোগকারীর নাম মালবিকা দে, যিনি পূজার সেই প্রযোজক বন্ধুর (শ্যামসুন্দর) স্ত্রী। মালবিকা নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে জানিয়েছেন, তাদের গোয়া সফরের সময় তার স্বামী শ্যামসুন্দরকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে অপহরণ করা হয়। এই অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে তিনি অভিনেত্রী পূজা ব্যানার্জির নাম উল্লেখ করেন।
মালবিকার দাবী অনুযায়ী ঘটনাটি ছিল ভয়াবহ ও পরিকল্পিত। শ্যামসুন্দরকে অজানা একটি স্থানে নিয়ে গিয়ে তাকে ভয় দেখানো হয়, শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয় এবং বলা হয় যে তিনি যদি ৬৪ লাখ টাকা না দেন, তবে তাকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হবে। চরম ভয়ে পড়ে শ্যামসুন্দর বাধ্য হন ২৩ লাখ টাকা পরিশোধ করতে।
এই অর্থের কিছু অংশ নগদে পূজার সহকারী মুনমুনের হাতে দেওয়া হয় এবং বাকি অংশ আরটিজিএস-এর মাধ্যমে পূজা ও কুণালের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয় বলে জানান মালবিকা। তার দাবি, এ বিষয়ে ব্যাংক লেনদেনের স্টেটমেন্ট, রসিদ, এবং অন্যান্য প্রমাণ তারা সংরক্ষণ করেছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পূজা ও কুণাল শ্যামসুন্দরের মোবাইল কেড়ে নেন, ব্যক্তিগত তথ্য ও পাসওয়ার্ড আদায় করে তাকে দিয়ে জোর করে একাধিক ভিডিও রেকর্ড করানো হয় এবং পূর্বনির্ধারিত বক্তব্য দিতে বাধ্য করা হয়।
গোয়া পুলিশের সহযোগিতায় এবং নর্থ গোয়ার এসপির তত্ত্বাবধানে শ্যামসুন্দরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানানো হয়। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, পুলিশ ইতোমধ্যে BNS-এর একাধিক ধারায় পূজা ব্যানার্জি, কুণাল ও মুনমুনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।
শ্যামসুন্দরের পরিবার এফআইআর কপি, ব্যাংক রসিদ, ভয়ভীতির হোয়াটসঅ্যাপ স্ক্রিনশট, ভয়েস মেসেজ, পুলিশের ধন্যবাদ বার্তা সহ সব প্রমাণ গণমাধ্যমের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এদিকে পূজা ব্যানার্জি এই অভিযোগ নিয়ে এখনো প্রকাশ্যে বিস্তারিত কোনো মন্তব্য না করলেও তিনি জানিয়েছেন, “খুব শিগগিরই আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।”
এই ঘটনায় টালিউডে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং এর পরবর্তী আইনি অগ্রগতি ঘিরে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।