পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে মুক্তি পেয়েছে ছয়টি নতুন বাংলা সিনেমা। এসব সিনেমা নিয়ে দর্শকমহলে যেমন কৌতূহল ছিল, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। তবে ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ (আইএমডিবি) অনুযায়ী এবারের ঈদের সিনেমাগুলোর কোনোটি এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে ‘ওয়াচলিস্টে’ জায়গা পায়নি। যদিও রেটিং, ভোট ও রিভিউয়ের বিচারে কিছু সিনেমা তুলনামূলকভাবে এগিয়ে আছে।
ঈদের সিনেমাগুলোর মধ্যে রেটিংয়ের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে ‘উৎসব’। তানিম নূর পরিচালিত এই সিনেমাটি চার্লস ডিকেন্সের ক্লাসিক গল্প ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে নির্মিত। তবে এর প্রেক্ষাপট বদলে এনে ঢাকার মোহাম্মদপুরে বসানো হয়েছে গল্পের মূলধারা। সিনেমাটি দেখতে গিয়ে দর্শকেরা যেন ফিরে যান ৯০ দশকের পারিবারিক আবহে। তারিক আনাম খান, জাহিদ হাসান, জয়া আহসান, চঞ্চল চৌধুরীসহ বহু গুণী শিল্পীর অভিনয়ে নির্মিত ‘উৎসব’ পেয়েছে ৮.৮ রেটিং।
অন্যদিকে শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ মুক্তির পর থেকেই বক্স অফিসে হাউসফুল চলছে। দ্বিতীয় দিন থেকেই এই সিনেমার শো সংখ্যা বাড়তে থাকে। সিনেমাটির আইএমডিবি রেটিং ৮.৪ এবং ভোট দিয়েছেন ৩৯৩ জন। দর্শকদের অর্ধেকের বেশি ‘তাণ্ডব’-কে দিয়েছেন পূর্ণ ১০। এই সিনেমায় ক্যামিও চরিত্রে চমক হিসেবে দেখা গেছে আফরান নিশো ও সিয়াম আহমেদকে। আরও আছেন জয়া আহসান ও সাবিলা নূর।
‘তাণ্ডব’-এর পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হলে চলেছে শরীফুল রাজ ও তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত সিনেমা ‘ইনসাফ’। এটি ছিল ফারিণের প্রথম মূলধারার সিনেমা। শুরুতে কম সংখ্যক হলে মুক্তি পেলেও দর্শকদের আগ্রহ বাড়ার কারণে এর শো সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। পরিচালনায় ছিলেন সঞ্জয় সমাদ্দার। সিনেমাটি পেয়েছে ৭ রেটিং এবং মোট ভোট ৪১টি। অতিথি চরিত্রে ছিলেন চঞ্চল চৌধুরী ও মোশাররফ করিম।
আরিফিন শুভ অভিনীত ‘নীলচক্র’ সিনেমায় উঠে এসেছে একটি ভয়াবহ ভিডিও স্ক্যান্ডালের গল্প, যা ঘিরে ঘটেছে পাঁচটি আত্মহত্যা। একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অপরাধের জট খুলতে গিয়ে পুলিশ ও দর্শক—দুজনেই আটকে যান রহস্যের ভেতরে। আইএমডিবি রেটিং ৮, মোট ভোট ৩২টি। এটি পরিচালনা করেছেন মিঠু খান।
‘এশা মার্ডার: কর্মফল’ সিনেমার কাহিনি এগিয়েছে এক তরুণীর খুনকে ঘিরে। এই রহস্যজনক ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পড়ে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার ওপর, যাঁর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। চাঞ্চল্যকর তদন্ত, জিজ্ঞাসাবাদ ও অপরাধী চেনার চেষ্টার মধ্যে দিয়ে সিনেমাটি টানটান উত্তেজনা তৈরি করে। এটি পরিচালনা করেছেন সানী সানোয়ার। আইএমডিবি রেটিং ৭.৮ এবং ভোট দিয়েছেন ১০ জন।
ঈদের আরেক মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘টগর’-এ অভিনয় করেছেন আদর আজাদ ও পূজা চেরি। মুক্তির শুরুর দিকে সিনেমাটির শো ছিল বেশি, তবে দর্শকসংখ্যা কম হওয়ায় সেগুলো কমে এসেছে। আইএমডিবিতে সিনেমাটি এখনও কোনো ভোট পায়নি, যা নতুন সিনেমার জন্য বেশ অস্বাভাবিক। এটি পরিচালনা করেছেন আলোক হাসান।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ঈদের এই ছয়টি সিনেমার মধ্যে রেটিং ও আলোচনায় সবচেয়ে এগিয়ে ‘উৎসব’ ও ‘তাণ্ডব’। অন্য সিনেমাগুলোও ধীরে ধীরে দর্শকের মন জয় করার চেষ্টা করছে। নানা স্বাদের গল্প ও ভিন্ন ঘরানার এই সিনেমাগুলোর উপস্থিতি এবারের ঈদে বাংলা সিনেমার পর্দাকে করেছে বৈচিত্র্যময় ও বর্ণাঢ্য।