ঈদুল আজহা ২০২৫-এ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে ‘তাণ্ডব’। দেশজুড়ে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে চলছে হাউসফুল শো, আর দর্শকদের উচ্ছ্বাসে সিনেমাটি পরিণত হয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম বড় আলোচ্য বিষয়ে। জনপ্রিয়তা, রেটিং, তারকাবহুল অভিনয় এবং গল্পের গতি—সবদিক থেকেই এটি ঈদের অন্যতম সফল সিনেমা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

‘তাণ্ডব’ একটি রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার সিনেমা হলেও এর ভেতরে রয়েছে পারিবারিক ড্রামা, বিশ্বাসঘাতকতা, ক্যারিশমাটিক নেতৃত্ব এবং সামাজিক বার্তা। শাকিব খান এখানে মূল চরিত্রে এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন, যার জীবনের উত্থান-পতন এবং এক গভীর ষড়যন্ত্রের আবর্তে জড়িয়ে পড়ার গল্প সিনেমার কাহিনি গড়ে তোলে। সিনেমার একটি বড় চমক ছিল আফরান নিশো ও সিয়াম আহমেদের ক্যামিও চরিত্রে উপস্থিতি। যদিও তারা ছিলেন খুব অল্প সময়ের জন্য, তাদের উপস্থিতি দর্শকের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে। সেই সঙ্গে জয়া আহসান ও সাবিলা নূরের সংযোজন সিনেমাটিকে দিয়েছে ভারসাম্যপূর্ণ পারফর্ম্যান্স।

সিনেমাটি মুক্তির দ্বিতীয় দিন থেকেই প্রেক্ষাগৃহে শো সংখ্যা বাড়ানো হয় দর্শকের চাহিদার কারণে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সিনেমাটি ঘিরে ইতিবাচক আলোচনা শুরু হয়। আইএমডিবি রেটিংয়েও সিনেমাটি পিছিয়ে নেই—রেটিং ৮.৪, যেখানে ৩৯৩ জন দর্শক ভোট দিয়েছেন এবং তাদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ সিনেমাটিকে ১০–এ ১০ দিয়েছেন। এটি বাংলা সিনেমার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন।

চিত্রগ্রহণ, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ও সংলাপ ছিল সিনেমাটির অন্যতম শক্তিশালী দিক। নির্মাতারা কারিগরি মান বজায় রেখেছেন, আর সংলাপগুলোতে ছিল নাটকীয়তা ও চরিত্র-নির্ভর আবেগের বহিঃপ্রকাশ। গান ব্যবহারে ছিল সংযম, যা গল্পের গতিপথ ব্যাহত না করেই আবহ তৈরি করেছে।

‘তাণ্ডব’ ঈদের শুরুতেই সর্বাধিক সংখ্যক হলে মুক্তি পায়। পাশাপাশি প্রচারণাও ছিল জোরালো। শাকিব খানের জনপ্রিয়তা এবং সিনেমার প্রিমিয়ার শো ঘিরে আগ্রহ তৈরি হয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও প্রচারপত্রে দেখা গেছে। এসব প্রচারণা সরাসরি বক্স অফিসে প্রভাব ফেলেছে।

যদিও সমালোচকদের কেউ কেউ গল্পের কিছু জায়গায় পূর্বানুমেয়তা খুঁজে পেয়েছেন, তবুও সমগ্র সিনেমা একটি সফল মেনস্ট্রিম প্রযোজনার স্বীকৃতি পেয়েছে। বাণিজ্যিক দিক থেকেও সিনেমাটি ভালো করছে এবং বছরের অন্যতম সফল ছবিতে পরিণত হওয়ার পথে রয়েছে।

শাকিব খানের অভিজ্ঞতা আর তারকাময় উপস্থিতির পাশাপাশি নতুন প্রজন্মের অভিনেতাদের চমক সিনেমাটিকে দিয়েছে একটি তাজা ভাব। প্রমাণ হয়েছে, পরিকল্পিত নির্মাণ ও অভিনয়ের ভারসাম্যে বাংলা সিনেমা এখনো দর্শক টানতে সক্ষম।