বাংলাদেশি ওয়েব প্ল্যাটফর্ম চরকিতে সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ওয়েব ফিল্ম “আমলনামা” যেন এক আয়না, যেখানে প্রতিফলিত হয় সমাজের নিষ্ঠুরতা, পাপ-পুণ্যের টানাপোড়েন আর মানুষের ভেতরের অপরাধবোধ। পরিচালনায় আছেন জনপ্রিয় নির্মাতা রায়হান রাফি, যিনি এইবার ভিন্ন ছন্দে গল্প বলার সাহস দেখিয়েছেন।
“আমলনামা” শুরু হয় এক শান্ত জীবনের আবহে। কিন্তু দ্রুতই দর্শক বুঝতে পারেন, এই শুদ্ধতার আবরণ ভেদ করে বেরিয়ে আসছে এক পুরনো পাপ, যার রেশ টেনে ধরে রেখেছে হাসান নামের এক ব্যক্তিকে। সে ভুল করেছে, কিন্তু সে কি তার শাস্তি ভোগ করেছে? নাকি সমাজ চায়, সে বারবার দগ্ধ হোক? এই প্রশ্নগুলোই চলচ্চিত্রটিকে করে তোলে অন্যদের থেকে আলাদা—একটি সাধারণ গল্প নয়, এটি একটি নৈতিক দ্বন্দ্বের অদৃশ্য ট্রায়াল।
জাহিদ হাসান তার অভিনয় দিয়ে চরিত্রটিকে করে তুলেছেন বাস্তব, করুণ এবং দ্বিধায় ভরা। তমা মির্জা, কামরুজ্জামান কামু, ও গীতশ্রী চৌধুরী প্রত্যেকেই অভিনয়ে যুক্ত করেছেন গভীরতা—যেন চরিত্রগুলো আমাদের পাশের ঘরের মানুষ।
সিনেমাটোগ্রাফি এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছবির আবহে বিষাদ আর জিজ্ঞাসা এনে দিয়েছে। সাদামাটা সেট, পরিচিত মুখ, কিন্তু এক অসাধারণ বর্ণনাশৈলী—এটাই “আমলনামা”র শক্তি।
“আমলনামা” দেখার পর মনে প্রশ্ন জাগে—আমরা কি একজন মানুষকে শুধরে নিতে দেই, নাকি তার অতীত দিয়ে তাকে চিরদিন বিচার করি? এই ফিল্মটি শুধুমাত্র একটি গল্প নয়, এটি একটি সমাজ-পরীক্ষা।
যারা ওয়েব কনটেন্টে ভিন্নতা ও বাস্তবতা খোঁজেন, “আমলনামা” তাদের জন্য এক জরুরি দর্শন।